♦ اقرَأ بِاسمِ رَبِّكَ الَّذي خَلَقَ ♦ পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।




বাংলাদেশের ওষধি উদ্ভিদ


অর্জুন


ইংরেজি নাম: Arjun tree

বৈজ্ঞানিক নাম: Terminalia arjuna

what image shows
অর্জুন একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এরা মধ্যম বা বৃহৎ আকৃতির বৃক্ষ, প্রায় ২০-২৫ মিটার উঁচু হতে পারে। মার্চ থেকে জুন মাসের ভিতরে এদের ফুল ফোটে।

বিস্তার
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা অর্জুনের আদি নিবাস। বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলে অর্জুন গাছ কম-বেশি দেখা যায়। বিশেষত রাস্তার দুপাশে এবং চট্টগ্রাম ও সিলেটের বনাঞ্চলে প্রচুর জন্মে থাকে। আর্দ ও নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া অর্জন গাছের জন্য উপযোগী। সাধারনত দো-আঁশ মাটিতে এ গাছটি ভালো হয়ে থাকে।

চাষাবাদ
স্যাঁতস্যাঁতে ও ঊর্বর দোআঁশ মাটি অর্জুন চাষের জন্য উপযুক্ত। গাছে বৈশাখ–আষাঢ় মাসে ফুল ফুটে এবং পৌষ –ফাল্গুন মাসে ফল পাকে। অর্জুনের বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা যায়। সাধারণত মার্চ-এপ্রিল মাসে পরিপক্ক ফল হতে বীজ সংগ্রহ করা হয়। বীজ বপনের পূর্বে ৪৮ ঘণ্টা ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরবর্তীতে বীজতলায় বীজ বপন করা হয়। বীজতলার মাটি ও গোবরের অনুপাত হবে ৩ : ১ । নয় মাস বয়সের অঙ্কুরিত চারা বীজতলা বা নার্সারী থেকে সংগ্রহ করে রোপন করা হয়। বর্ষার শুরুতেই নির্দিষ্ট স্থানে রোপন করতে হয়।

বাকল ও বীজ সংরক্ষণ
অর্জুনের বাকল বাংলায় ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়। পরিপক্ক গাছ থেকে ছাল সংগ্রহ করে ছোট ছোট টুকরো করে ৪-৫দিন রৌদ্রে শুকিয়ে চটের বস্তায় ভরে শুষ্ক স্থানে রেখে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায় এবং এর কার্যকারিতা অটুট থাকে। এছাড়া পুরোপুরিভাবে পরিপক্ক বীজ গাছ থেকে সংগ্রহ করে ভালোভাবে রৌদ্রে শুকিয়ে বায়ুরোধী পাত্রে রেখে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।

ব্যবহার
অর্জুন গাছের ছাল, পাতা ও ফল ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অর্জুনের গাছের কাঠ বেশ শক্ত। একদা গরুর গাড়ির চাকা নির্মাণে অর্জুনগাছ ব্যবহৃত হতো। গৃহনির্মাণ, কৃষি উপকরণ,জলযান, নৌকা,দাড়,মাস্তুল,খনি ও নলকূপ খননে এই গাছের কাঠ ব্যবহৃত হয়। এর বাকল থেকে আহরিত ট্যানিন চামড়াতে ব্যবহৃত হয়। অর্জুনের বাকল থেকে হৃদরোগের ওষুধ , পাতার রস আমাশয় রোগের ওষুধ বানানো হয় এবং পাতা তসর রেশম পোকার খাদ্য।