মেহগনি (Mahogany, mahogany tree) এটি একটি দ্বিবীজপত্রী গুপ্তবীজী উদ্ভিদ। এটি meliaceae (নিম) গোত্রের অন্তর্গত Swietenia গণের কিছু প্রজাতির সাধারণ নাম। অন্যান্য নাম মেহগনি, মেহগিনি, মেহগেনি, মেহাগিনী। মেহগনি গাছ প্রায় ৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এদের পাতা বেশ বড় বড় হয়ে থাকে।। এই প্রজাতিগুলোর ভিতরে তিনটি প্রজাতিকে বিশেষভাবে মেহগনি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। এই প্রজাতিগুলো হলো– Swietenia mahagoni (L.) Jacq., Swietenia macrophylla King, and Swietenia humilis Zucc। মেহগনির আদি নিবাস উত্তর আমেরিকার ক্রান্তীয় অঞ্চল। বিশেষ করে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জকেই এদের আদি নিবাস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। ইউরোপীয় বণিকদের মাধ্যমে ভারতবর্ষসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে এই গাছটি ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার দক্ষিণে এই গাছগুলো প্রাকৃতিকভাবে জন্মে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই গাছের চাষ করা হয়। প্রজাতিভেদে বড় বা ছোট মেহেগনি নামে অভিহিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ Swietenia mahagoni এবং Swietenia macrophylla প্রজাতি দুটির চাষ হয়ে থাকে। এর ভিতরে Swietenia macrophylla জাতীয় গাছ বেশি দেখা যায়। বাংলাদেশে বসন্তকালে (মার্চ মাসে) মেহগনিগাছের পাতা ঝরে যায়। এর কিছুদিন পর নতুন পাতা গজায়। এই গাছটি মূলত কাঠের জন্য জনসাধারণের কাছে আদৃত। এর কাঠ খুব শক্ত এবং ঘন আঁশযু্ক্ত। মূলত আসবাবপত্র তৈরি করার জন্য এই গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ছায়াপ্রদানকারী বৃক্ষ হিসাবে পথের পাশে এই গাছ লাগানো হয়। মেহগনি গাছ বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মায়। মেহগনি গাছের পাতা, বিচি, ফল, মূল, বাকল ঔষধ হিসেবে ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতাঃ ১। মেহগনি ফলের বিচির ভেতরের সাদা শাঁস পানিতে ভিজিয়ে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে।
২। মেহগনি গাছের বাকলের নির্যাস শক্তিবর্ধক। তাই মেহগনির বাকল সিদ্ধ করে সেবন করলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।
৩। মেহগনির বিচি, ফল ও মূলের গুঁড়ো খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়।
৪। মেহগনি বীজের সাদা অংশ দিয়ে তেল তৈরি হয়। এই তেল ভেষজ কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
৫। ফসল পাখির আক্রমন থেকে বাঁচাতে মেহগনি গাছের ডাল কলম করে লাগিয়ে চাড়ার মত করে ক্ষতের পাশে লাগালে পাখির আক্রমন থেকে বাঁচা যায়। এই গাছে পাখি বাসা বানায় না এমনকি বসেও না।